
একই হত্যাকান্ডে দুই মামলাঃ বিচার একসাথে নাকি আলাদা?
১। ১৬ সেপ্টেম্বর ২০১৭ তারিখের ঘটনায় সুনামগঞ্জ জেলার জগন্নাথপুর থানায় দুটি জি আর মামলা হয়। পরবর্তীতে মৃত ব্যক্তির স্ত্রী L বেগম বাদী হয়ে একটি সি আর মামলা দায়ের করে। এরই প্রেক্ষিতে আমল গ্রহণকারী আদালত জগন্নাথপুর জোন, সুনামগঞ্জ L বেগমের স্বামী হত্যা সংক্রান্তে দায়েরকৃত সি আর মামলা ও জি আর মামলা একসাথে সংযুক্ত করার আদেশ প্রদান করেন। উক্ত আদেশের বিরুদ্ধে জি আর মামলার বাদী পক্ষ ক্রিমিনাল রিভিশন দায়ের করে। উক্ত রিভিশন মামলায় আমলী আদালত কর্তৃক প্রদত্ত আদেশ বাতিল করা হয়। রিভিশন মামলার এই আদেশের বিরুদ্ধে হাইকোর্ট বিভাগে ৫৬১ক ধারায় Quashment আবেদন দায়ের করি।
২। ১৬ সেপ্টেম্বর ২০১৭ তারিখে সুনামগঞ্জ জেলার জগন্নাথপুর থানাধীন সংশ্লিষ্ট মাদরাসার সামনে কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে হাতাহাতি হয় এবং বন্দুকের গুলিতে একজন গুরুতর আহত হয়। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে দুটি জি আর মামলা দায়ের হয়। বাদী ৩৮ জনের বিরুদ্ধে জগন্নাথপুর থানায় দন্ডবিধির ১৪৩, ৩২৩, ৩২৪, ৩২৫, ৩২৬, ৩০৭ ও ১১৪ ধারায় একটি জি আর মামলা দায়ের করে। এই মামলার প্রয়োজনীয় অংশ নিম্নে তুলে ধরা হলঃ
“গত ১৬/০৯/২০১৭ ইং তারিখ সকাল ১১.৩০ ঘটিকার সময় সংশ্লিষ্ট মাদরাসার ২০ একর বোরো জমি এক বছরের জন্য মাদরাসার প্রাঙ্গনে লিজ অনুষ্ঠিত হয়। উক্ত নিলাম অনুষ্ঠানের শেষ পর্যায়ে অর্থাৎ বেলা অনুমান সাড়ে ১২ ঘটিকার সময়…কথা কাটাটির এক পর্যায়ে হাতাহাতি হয়। উক্ত ঘটনাকে কেন্দ্র করিয়া আসামী A সহ তার সহযোগী অন্যান্য আসামীগণ দৌঁড়াইয়া বাড়িতে যায়। আসামী A এবং এজাহারনামীয় অন্যান্য আসামীগণসহ অজ্ঞাতনামা আসামীগণ বে-আইনি জনতাবদ্ধে একই উদ্দেশ্যে আসামী A তাহার নামে লাইসেন্সকৃত অস্ত্র নিয়া…অন্যান্য আসামীগণ আক্রমণ করে।”
৩। একই ঘটনাকে কেন্দ্র করে জনাব B বাদী হয়ে জগন্নাথপুর থানায় দন্ডবিধির ১৪৩, ৪৪৭, ৪৪৮, ৩২৩, ৩২৪, ৩২৫, ৩২৬, ৩০৭, ৩৮৯, ৩৮০, ৪৩৬, ৫০৬ ও ১১৪ ধারায় ৮০ জনের বিরুদ্ধে অপর মামলা দায়ের করে। উক্ত মামলার প্রয়োজনীয় অংশ নিম্নে তুলে ধরা হলঃ
“গত ১৬/০৯/১৭ ইং তারিখে সকাল অনুমান ১১ ঘটিকার সময় সংশ্লিষ্ট মাদরাসার ...ফসলী জমি নিলাম অনুষ্ঠিত হয়। উক্ত নিলাম অনুষ্ঠানের শেষে মাদরাসার ম্যানেজিং কমিটি সংক্রান্ত ব্যাপার নিয়ে মাদরাসা ভূমিদাতা পরিবারের সদস্য A এর সাথে ১ নং বিবাদীর কথা কাটাকাটি হয়। উক্ত ঘটনার পর আমার ভাতিজা A সহ আমরা বাড়িতে চলিয়া আসি। এ অবস্থায় দুপুর অনুমান ১ ঘটিকার সময় সকল বিবাদীগণ পূর্ব পরিকল্পিতভাবে আমার ধান রক্ষিত অটো রাইস মিলে লুট করার জন্য জড়ো হয়…বিবাদীগণ ক্ষিপ্ত হইয়া ৫ নং বিবাদী অন্যান্য বিবাদীদেরকে হুকুম দিয়া বলে এই গুলি কর এবং মিলে রক্ষিত মালামাল লুট কর। সাথে সাথে ১ নং বিবাদী তার হাতে থাকা অবৈধ বন্দুক দিয়া ১ নং সাক্ষীকে প্রাণে হত্যার উদ্দেশ্যে গুলি করিলে গুলি তাহার ডান পায়ের উরুতে পড়িয়া মারাত্মক জখম হয়….।”
৪। ২৭ সেপ্টেম্বর ২০১৭ ইং তারিখে জখমী সাক্ষী চিকিৎসাধীন অবস্থায় সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মৃত্যু বরণ করে। ফলশ্রুতিতে জি আর মামলার সাথে ৩০২ ধারা যোগ করা হয়। ২২ মার্চ ২০১৮ তারিখে ৪০ জনকে আসামী করে চার্জসীট দায়ের করা হয়।
৫। এদিকে মৃতের স্ত্রী L বেগম বাদী হয়ে ০৯ মে ২০১৮ তারিখে জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আমল গ্রহণকারী আদালত জগন্নাথপুর- এ দন্ডবিধির ৩০২/৩৪ ধারায় একটি সি আর মোকদ্দমা দায়ের করে। উক্ত মামলায় জি আর মামলার সংবাদদাতা ও ৪ জন সাক্ষীকে আসামী করা হয়। উক্ত মামলায় তিনি উল্লেখ করেন যে, বিবাদীদের কারণে তিনি এত দিন এই মামলা দায়ের করতে পারেন নাই। প্রয়োজনীয় অংশ নিম্নে তুলে ধরা হলঃ
“বাদীনির স্বামী ডিসিজড … সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকাবস্থায় গত ২৭/০৯/২০১৭ ইং তারিখ ১১.৫ ঘটিকার সময় মৃত্যু বরণ করেন। বাদীনীর স্বামী ডিসিজড …ময়না তদন্ত শেষে আসামীগণ বাদীনীর স্বামীর লাশ গ্রহণ করিয়া দাফন করে ফেলে। আসামীগণ বাদীনি বা তাহার আত্মীয়স্বজন কাউকে উক্ত লাশ গ্রহণ এবং লাশ দাফন কার্যে অংশগ্রহণ করতে দেয় নাই। এমনকি কোন আইন প্রয়োগকারী সংস্থা ও বাদীনি বা তাহার পরিবারের কাউকে কিছু জিজ্ঞাসাবাদ করে নাই বা খোজ খবর নেয় নাই।…১ নং আসামীর সলা পরামর্শে আসামী K তাহাদের প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে জগন্নাথপুর থানার মোকদ্দমা নং- ১০…দায়ের করে এবং ওই মোকদ্দমায় বাদীনির স্বামী ডিসিজড … কে জখমী হিসাবে তাহাদের পক্ষের সাক্ষী মান্য করে। ডিসিজড মৃত্যু বরণ করার পর ওই মোকদ্দামায় দন্ডবিধির ৩০২ ধারা সংযোজন করা হয়। প্রকৃত পক্ষে বাদীনীর স্বামী ডিসিজড আসামীগণের প্রতিপক্ষ দ্বারা আহত হন নাই। বাদীনির স্বামী কখনো আসামীগণের প্রতিপক্ষের তথা A গংয়ের প্রতিপক্ষ ছিলেন না।”
৬। এই প্রেক্ষিতে আমলী আদালত জগন্নাথপুর জোন, সুনামগঞ্জ ২৪ মে ২০১৮ তারিখে অত্র সি আর মামলার নথি জি আর মামলার নথির সাথে যুক্ত করার আদেশ দেন। উক্ত আদেশের প্রয়োজনীয় অংশ নিম্নে উল্লেখ করা হলঃ
“যেহেতু সি আর … মামলা এবং জি আর …মামলার বিষয়বস্তু এক এবং কতিপয় আসামীও অভিন্ন সেহেতু অত্র সি আর …মামলাটির কার্যক্রম ফৌজদারী কার্যবিধি ১৮৯৮ এর ধারা ২০৫(ডি) উপধারা ২ অনুযায়ী জি আর …মামলার সহিত একত্রে পরিচালিত হওয়ার নিমিত্তে নথি জি আর …মামলার সাথে সংযুক্ত করার জন্য প্রেরণ করা হোক।”
অত্র আদেশের বিরুদ্ধে জি আর মামলার সংবাদদাতা জনাব K রিভিশন মোকদ্দামা দায়ের করেন। L বেগম উক্ত মামলায় পক্ষভুক্ত হওয়ার দরখাস্ত দাখিল করলে সুনামগঞ্জ দায়রা জজ উক্ত দরখাস্ত মঞ্জুর করেন। উভয় পক্ষকে শুনানিঅন্তে উক্ত রিভিশন মোকদ্দমাটি মঞ্জুর করেন এবং আমলী আদালতের আদেশ বাতিল করে দেন। প্রয়োজনীয় অংশ নিম্নে তুলে ধরা হলঃ
“It is carefully understood that no accused in the case of GR…were accused in the case of CR…The accused in the case of CR …were the informant and witnesses of the GR Case No. …From a close scrutiny of papers and materials on record, it is noticed that the learned Magistrate, therefore committed error in passing the order. As a result, the grounds assigned in the memo of Revision are reasonable and acceptable.”
৭। নিম্ন আদালতের নথি পত্রের সকল সার্টিফাইড কপি হাতে পেয়ে পর্যালোচনা করি। পর্যালোচনায় স্পষ্ট হয় যে, এই মামলায় একটি জটিল আইনি বিষয় জড়িত। সেজন্য জুনিয়র বন্ধুদের নিয়ে লিগ্যাল রিসার্চ শুরু করি। রিসার্চ শেষে বোঝা যায় যে, ফৌজদারী কার্যবিধির ২০৫ঘ এই পরিস্থিতিতে প্রযোজ্য। আমার সিনিয়র জনাব খন্দকার মাহবুব হোসাইন স্যারের সাথে বিস্তারিত পরামর্শ করি। পরামর্শ শেষে সিদ্ধান্ত নেই ফৌজদারী কার্যবিধির ৫৬১ক ধারা অনুযায়ী কুয়াশমেন্ট পিটিশন দায়ের করব। সিদ্ধান্তের আলোকে জুনিয়র আইনজীবী বন্ধু সাদ্দাম হোসেন মামলাটি প্রস্তুত করে। আমার ক্লার্ক নয়ন আলী এফিডেভিট সম্পন্ন করে এনেক্স ১৬ নং আদালতে শুনানির জন্য জমা দেয়। যথারীতি লিস্টে আসার পর সিনিয়র আইনজীবী খন্দকার মাহবুব হোসেন স্যারকে নিয়ে শুনানিতে অংশ গ্রহণ করি। শুনানিতে স্যার বলেন, “My Lords, there is a legal question involved here. Out of self-same occurrence a G.R. Case is lodged by third party and a C.R. Case was filed by the wife of the deceased. I am for the wife. The concern Magistrate amalgamated both the cases. But the learned Sessions Judge set aside that order. I am before my Lords challenging the Judgment and Order of the Sessions Judge. This is a serious question of law. Your Lordships should issue rule and examine the matter for the purpose of settling the jurisprudence. In the meantime both the proceedings should be stayed.”
৮। দ্বৈত বেঞ্চের মাননীয় বিচারপতিগণ পরামর্শ করলেন। মাননীয় সিনিয়র বিচারপতি আমাকে জিজ্ঞাসা করলেন যে, জি আর কেসের সকলকে এই মামলায় পক্ষভূক্ত করা হয়েছে কিনা? আমি উত্তরে বললাম, না মাই লর্ড করা হয় নাই। তখন জুনিয়র বিচারপতি বললেন, একটি সাপ্লিমেন্টারি এফিডেভিট দিয়ে সবাইকে পক্ষভূক্ত করেন। অন্যথায়, তারা ক্ষতিগ্রস্থ হবে। আমি অত্যন্ত বিনয়ের সহিত একমত পোষণ করলাম। খন্দকার স্যার আমাকে কাজটি দ্রুত করতে নির্দেশ দিলেন। সিনিয়র বিচারপতি পরদিন আদেশের জন্য রাখলেন।
৯। যথারীতি মামলাটি আদেশের জন্য লিস্টে আসল। আমি সাপ্লিমেন্টারি দায়ের করলাম। ১৩ মার্চ ২০১৯ তারিখ রুল জারি হল এবং দুটো মামলার সমস্ত কার্যক্রম ৩ মাসের জন্য স্থগিত করা হল। এই আদেশের নোটিশ নিম্ন আদালত ও পক্ষগণের নিকট জারি হল এবং এরই আলোকে নিম্ন আদালত মামলা দুটোর সমস্ত কার্যক্রম ৩ মাসের জন্য স্থগিত করলেন।
১০। এদিকে জি আর মামলার সংবাদদাতা জনাব K হাইকোর্টের এই আদেশের বিরুদ্ধে আপীল বিভাগের চেম্বার জজের আদালতে উক্ত আদেশ স্থগিত চেয়ে দরখাস্ত দায়ের করেন। মাননীয় চেম্বার জজ জিনাত আরা উভয় পক্ষকে শুনানিঅন্তে স্থগিতাদেশ না দিয়ে ফুল কোর্টে শুনানির জন্য তারিখ নির্ধারণ করে দেন।
১১। যথারিতী শুনানির জন্য ফুল কোর্টে আসে। অপর পক্ষের আইনজীবী নিবেদন করেন যে, “My Lord, proceedings of a murder case has been stayed by the High Court Division. How is this possible to stay a proceeding of a murder case while investigation has been completed? Further there was no similarity between the accused persons of the two cases.” My Lord justice Mr. Hasan Foez Siddique asked him “who are you? What is relationship with the deceased?” and the learned counsel answered that I am the informant of the G.R. Case. The Judge being unsatisfied again paused the question that I understand that you were the informant but what is your relationship with the informant? Mysteriously the counsel remained silent.
তারপর জনাব খন্দকার মাহবুব হোসেন দাড়িয়ে বললেন, “My Lord, I am the wife of the deceased. He is a stranger. He has no nexus with the deceased. They did not even allow me to see the dead body after his demise. Therefore, the stay order should be continued and at best your Lordship can direct the HCD to dispose of the rule expeditiously.” তাৎক্ষণিক মাননীয় প্রধান বিচারপতি বললেন, “এই বিষয়ে আমার রায় আছে। হাইকোর্ট ডিভিশন ৪ সপ্তাহের মধ্যে বিষয়টি নিষ্পত্তি করবে। No stay Order.”
১২। এই আদেশে আমরা খুশি হলাম এবং ফাইলপত্র নিয়ে কোর্ট চেম্বারে আসলাম। সুপ্রিম কোর্টের এই আদেশ হাইকোর্টের নথিতে শামিল হতে বেশ কয়েক সপ্তাহ সময় লাগল। অতঃপর অপর পক্ষের আইনজীবী মামলাটি শুনানির জন্য পদক্ষেপ গ্রহণ করলেন। আমি কিছুটা বিলম্ব করতে চাইলাম। সিনিয়র আইনজীবী খন্দকার মাহবুব হোসেনের কথা বলে দুই বার সময় নিলাম। মামলাটি শুনানির জন্য প্রত্যেক বুধবার কার্যতালিকায় আসত। আমার ছেলে অসুস্থ থাকায় আমি আদালতে যেতে পারি নাই এবং এডভোকেট আসাদ উদ্দিনকে আদালতে থাকার অনুরোধ করি। পরে তিনি আমাকে জানান যে, আমি না থাকার কারণে জজ সাহেব বিরক্ত হয়েছেন। পরের বুধবার সমস্ত প্রস্তুতি নিয়ে আমি হাজির হই। আদালত আমাকে দেখে বলেন, “শিশির মনির, মামলাটি শুনানি করেন না কেন? বাচ্চা কেমন আছে? সুপ্রিম কোর্টের আদেশ আছে তো আমাদের শেষ করতে হবে।” উত্তরে আমি বললাম, “My Lord, I am sorry for my unintentional absence. Actually I became weaker to my fatherhood. Now my son is better and I am ready to conduct hearing as your Lordships wish.”
অপরপক্ষ মামলার সুবিধার্থে বিজ্ঞ ফৌজদারী আইনজীবী জনাব মোঃ শাহজাহান স্যারকে নিযুক্ত করে। জনাব শাহজাহান স্যারের সাথে বেশ কিছু কাজ করার সুযোগ আমার হয়েছিল। সেজন্য আমরা আগে থেকেই পরস্পর পরস্পরকে ভালভাবে জানতাম। আমার কোন অসুবিধা হলে তিনি বিবেচনা করতেন। তদ্রুপ তার কোন অসুবিধা হলেও আমি যত্নের সহিত দেখতাম। ফলে নানান অসুবিধার কারণে মামলাটি শুনানি করতে বেশ কয়েক সপ্তাহ সময় লেগে গেল।
১৩। এদিকে বিষয়ের জটিলতা অনুধাবন করে আমি লিগ্যাল রিসার্চ শুরু করি। বাংলাদেশ ও ভারতের সকল নজির খুজে সকল সিদ্ধান্তের ফটোকপি বাইন্ডিং করে আদালতের সামনে যাই। আমি আমার বক্তব্যের সমর্থনে Enayet Chowdhury vs. the State, reported in 70 DLR (AD) 23; Mokhlesur Rahman vs. Rabeya Parvin Chowdhury, reported in 4 MLR (AD) 260; Pal Alias Palla vs. State of UP, reported in (2010) 10 SCC 123 and Harjinder Singh vs. State of Punjab, reported in (1985) 1 SCC 423 আদালতে দায়ের করি। অপরপক্ষের আইনজীবী কোন নতুন সিদ্ধান্ত দায়ের করেননি বরং ক্ষেত্রবিশেষে তিনি আমার প্রদত্ত এই সিদ্ধান্তগুলোর উপর নির্ভর করেন। যুক্তি তর্কের মাঝে Cognizance (আমলে গ্রহণ) বিষয়ে প্রশ্ন উত্থাপিত হয়। মাননীয় সিনিয়র বিচারপতি মামলাটি আংশিক শ্রুত হিসাবে রাখেন এবং পরের সপ্তাহে পুনরায় শুনানির জন্য নির্দেশ দেন।
১৪। চেম্বারে এসে সকলে মিলে আবার রিসার্চ শুরু করি। প্রাসঙ্গিক সিদ্ধান্তসমূহ যোগাড় করে ইনডেক্স আকারে বাইন্ডিং করি। ওই দিন আদালতের সামনে বাইন্ডিংয়ের কপি দায়ের করি। আমার যুক্তি তর্কের সমর্থনে Mohammad Ismail vs. Md. Rafiqul Islam and Others, reported in 27 BLD (AD) 247; Shamim vs. The State, reported in 17 BLC (SC) 626; Mozam Hossain Bhuiya vs. The State, reported in 6 CLR 486; Md. Abdul Jaffar Sarker vs. State, reported in 64 DLR 103; Kazi Reshadur Rahman vs. Md. Gyasuddin, reported in 1 MLR (HC) 277 and Badsha Mia vs. State, reported in 10 DLR 412 এই সিদ্ধান্তের উপর নির্ভর করি। অপরপক্ষের বিজ্ঞ আইনজীবী নতুন কোন সিদ্ধান্ত আদালতে উপস্থাপন করেননি।
১৫। মামলাটি পুনরায় শুনানির জন্য পরের সপ্তাহে দিন নির্ধারণ করা হয়। ওই দিন মাননীয় বিচারপতি জিজ্ঞাসা করেন যে, “আচ্ছা শিশির মনির, ধরেন এই মামলাটি আমাদের সামনে নাই। এই অবস্থায় কি হওয়া উচিত বলে আপনি মনে করেন। আইনের বিধান কি বলে? একজন আইনজীবী হিসাবে আপনি কি সমাধান দিবেন?” আমি Privileged বোধ করলাম এবং বললাম “My Lord, in my humble understanding of section 205D, I believe both the Courts below committed error of law. Actually the C.R. Case should be allowed to move forward either by way of investigation or by inquiry. The learned Magistrate did not allow the C.R. Case to proceed. Similarly, the learned of Court of Session without resolving the matter mechanically set aside the order of the learned Magistrate. He could have given the solution as per section 205D of the CrPC.” আমার উত্তরের পর আপরপক্ষের আইনজীবীকে একই প্রশ্ন করলেন। তিনিও আমার মতই উত্তর দিলেন। উভয় বিচারপতি আন্তরিকতার সহিত শুনলেন এবং মামলাটি রায়ের জন্য রেখে দিলেন। পরিস্থিতির কারণে এখনও পর্যন্ত রায় ঘোষণা হয়নি।