
হিন্দু বিবাহঃ একটি আইনি পর্যালোচনা
বিয়ে একটি পবিত্র এবং অলঙ্ঘনীয় মিলন যার মাধমে স্বামী-স্ত্রী পরিবার গঠনের অধিকার লাভ করে। এটি মানবজীবনের গুরুত্বপূর্ণ অনুষঙ্গ। সনাতনধর্মে বিয়ের ধারণা হাজার বছরের পুরোনো। হিন্দু ধর্মানুযায়ী বিয়ে একটি ধর্মদীক্ষা (Sacrament), যা মন্ত্র পাঠ এবং আনুষঙ্গিক আচার পালনের মাধ্যমে সম্পন্ন হয়। হিন্দু বিয়ের পদ্ধতি যুগের চাহিদা পূরণে সময়ের সাথে পরিবর্তন হয়েছে।
আমাদের নিকট অনেক আইনি সমস্যা আসে যেখানে বিয়ের পর হিন্দু স্বামী তার বিবাহিত স্ত্রীর সাথে থাকছেন না, খোঁজখবরও নিচ্ছেন না। আইনি বাস্তবতায় এক্ষেত্রে সেই নারীর ভরণপোষণ পাওয়ার অধিকার রয়েছে। কিন্তু একজন নারীর সামাজিক-ব্যক্তিগত অনেক চাহিদা রয়েছে যা শুধুমাত্র আর্থিক ভরণপোষণ দ্বারা পূরণ করা সম্ভব নয়। আবার সেই নারীর বিবাহ বিচ্ছেদ সংক্রান্ত প্রতিকারও প্রচলিত আইনে অনুপস্থিত।
সময়ের চাহিদার প্রতি লক্ষ্য রেখে ভারত ১৯৫৫ সালে হিন্দু বিবাহ সম্পর্কিত নিয়মাবলি বিধিবদ্ধ করেছে। ফলে বিয়ে সংক্রান্ত বিরোধ সমূহ অনেকাংশে হ্রাস পেয়েছে। আদালতের জন্য বিরোধ নিষ্পত্তি সহজতর হয়েছে। অপরদিকে বাংলাদেশে এ মর্মে কোন কার্যকর উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। বিধিবদ্ধ আইন না থাকার কারণে বিচারক, আইনজীবী এবং বিচারপ্রার্থীগণ সকলেই অনিশ্চয়তার (Uncertainty) মধ্যে রয়েছেন। বিভিন্ন সংস্থা এবং সচেতন নাগরিক সমাজ হিন্দু আইন বিধিবদ্ধকরণের প্রয়োজনীয়তা অনুভব করে। উল্লেখ্য যে, বাংলাদেশ হিন্দু আইন সংস্কার পরিষদ নামে একটি প্লাটফর্মও গঠিত হয়েছে।
এপ্রেক্ষিতে হিন্দু বিয়ে সংক্রান্তে বাংলাদেশ ও ভারতে প্রচলিত আইন এবং সংশ্লিষ্ট নজিরসমূহ পর্যালোচনাপূর্বক একটি তুলনামূলক বিশ্লেষণ তুলে ধরতে - আমাদের এ ক্ষুদ্র প্রয়াস।